সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছুটতে গিয়ে আমরা নিজেদের জন্যই সময় বের করতে পারি না। ফলে ত্বকের অবস্থা হয় নির্জীব ও প্রাণহীন। সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ত্বকে পড়তে পারে দীর্ঘস্থায়ী দাগছোপ।
এসব সমস্যা থেকে ত্বককে রেহাই দিতে প্রাকৃতিক উপাদানে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন আপনার ত্বকের উপযোগী ফেসপ্যাক।
শুষ্ক ত্বক
এ ধরনের ত্বকের জন্য এমন ফেসপ্যাক লাগবে যা আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বক শীতল আর সতেজ রাখবে। শসা তো ঘরেই রয়েছে আর লাগবে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল। অর্ধেকটা শসা ব্লেন্ড করে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মুখে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
তৈলাক্ত ও ব্রণযুক্ত ত্বক
এই ধরণের ত্বকের জন্য ওটস খুব কাজে দেয়। নাশতার জন্য যেভাবে পানির সঙ্গে ওটস ফুটাতে হয়, সেভাবেই ফুটিয়ে বা গরম করে নিন। চিনি বা মধু দেওয়ার দরকার নেই। ২০ থেকে ৩০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে নিন। চাইলে কয়েক ফোঁটা ট্রি অয়েল বা সামান্য হলুদ গুঁড়া মেশাতে পারেন। ওটসে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে। এতে আরও রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই, প্রোটিন, প্রয়োজনীয় ফ্যাট এবং খনিজ।
গরমেও কেন ময়েশ্চাইরাইজার!গরমেও কেন ময়েশ্চাইরাইজার!
রোদে পোড়া ত্বক
দাগছোপ যুক্ত বা রোদে পোড়া ত্বকের ক্ষেত্রে হলুদ আর মধুযুক্ত প্যাক খুব কার্যকর। আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়া নিয়ে এক থেকে দুই টেবিল চামচ মধু নিয়ে নিন। ভালো করে মিশিয়ে মুখে মেখে ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে একদমই ভুলবেন না।
বয়সের ভাঁজ পড়া ত্বক
বলা হয়, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। ত্বকে বয়সের ভাঁজ দৃশ্যমান হওয়ার আগেই যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে। দুধ, মধু আর কোকো পাউডারের ফেসপ্যাক উপকারে আসবে। পরিমাণমত দুধ-মধু মিশিয়ে নিন প্রথমে, এরপর কোকো পাউডার মেশান। খেয়াল রাখতে হবে, মিশ্রণটি যেন বেশি শুষ্ক বা পাতলা কোনোটাই না হয়।
১৫-২০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে নিতে হবে। অ্যান্টি-এইজিং ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম লাগাতে ভুলবেন না। এই প্যাকে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর প্রত্যেকটিই পুষ্টিগুণসম্পন্ন। ফলে এই মিশ্রণের ব্যবহারে ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়, হয়ে ওঠে কোমল আর হাইড্রেটেড।
অ্যান্টি-এজিং ফেসপ্যাক সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দুই থেকে তিনবারের বেশি ফেসপ্যাক ব্যবহার করা উচিত না। হাইড্রেটিং মাস্ক প্রতি সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে আপনার যদি সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বক হয়, তাহলে সপ্তাহে একবার প্যাক লাগালেই হবে।
পানি দিয়ে প্যাক ধুয়ে নেওয়ার পর অবশ্যই টোনার, সেরাম, ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি লাগিয়ে নেবেন। নইলে ত্বক তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারাবে।