স্মরণকালের ভয়াবহ তুষার ঝড় আর হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় নায়াগ্রা জলপ্রপাতের একাংশে বরফ জমেছে। থমকে আছে সেই নয়নাভিরাম ঝরনাধারা। বিপুল জলরাশি নিয়ে নিচে আছড়ে পড়া নায়াগ্রা জলপ্রপাত প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনের তুষার ঝড়েই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় নায়াগ্রা নদীর পানি জমতে শুরু করেছে। পানির ওপর বরফের আস্তরণ পড়েছে। আর সেই বরফ নিয়েই নিচে আছড়ে পড়ছে জলপ্রপাত। এদিকে, নায়াগ্রা জলপ্রপাত কখনোই পুরোপুরি জমে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নায়াগ্রা পার্ক কর্তৃপক্ষ। কারণ এর বিশাল জলরাশি।
নায়গ্রা ফলস নিউ ইয়র্ক স্টেট পার্কের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই জলপ্রপাতে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি সেকেন্ডে ৩,১৬০ টন পানি প্রবাহিত হয়। নদীতে বরফ জমে যাওয়ায় সেই গতি কিছুটা কমেছে।
১৯৬৪ সালের আগে বরফের কারণে নায়াগ্রার পানির গতি বাধাপ্রাপ্ত হতো। কারণ নদীর উৎসই ঠাণ্ডায় জমে যেত। নদীর পানির গতি সচল রাখতে স্টিল আইস-বুম লাগানো হয়। যা বরফের চাঁই পানির ওপর জমতে দেয় না।
এ বছরে বম্ব সাইক্লোনে নায়াগ্রা জলপ্রপাত জমে গিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এই জলপ্রপাতকে দেখে মনে হতে পারে পুরোপুরি থমকে গেছে। কিন্তু আদৌ তা নয়। জলপ্রপ্রাতের উপরিভাগ জমে গেলেও নিচে জলের স্রোত বয়ে চলেছে। এমনটাই জানাচ্ছে নায়াগ্রা পার্কের ওয়েবসাইট।
বম্ব সাইক্লোনে নিউইয়র্ক বিপর্যস্ত হলেও এই পরিস্থিতিতে নায়াগ্রায় সৌন্দর্য দেখতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন অনেক পর্যটক। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪৮ ডিগ্রি নিচে নেমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তুষারঝড়ের প্রকোপে বিদ্যুৎহীন লাখ লাখ পরিবার। ইতোমধ্যেই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারা গেছেন ৬২ জন। জনজীবন বিপর্যস্ত।
নিউইয়র্কের পরিস্থিতি যে ভয়াবহ নায়াগ্রা জলপ্রপাতেই সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে। যে বম্ব সাইক্লোনে বিপর্যস্ত নিউইয়র্কসহ গোটা আমেরিকা, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ইতোমধ্যেই ‘শতাব্দীর ভয়ঙ্কর তুষারঝড়’ বলে দাবি উঠতে শুরু করেছে। শুধু নিউ ইয়র্কেই মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের।
নিউ ইয়র্কের মধ্যে ইরি, বাফেলো এবং নায়াগ্রা কাউন্টির অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। ইরিতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে এই তুষারঝড়ে। বাফেলো ডুবে গিয়েছে ৪-৫ ফুট বরফের নিচে। টানা ৫ থেকে ৬ দিন প্রবল তুষার ঝড়ে বিপর্যস্ত। যার ফলে দেশের নানা প্রান্তে পুরু বরফের স্তর জমে গেছে। কোথাও কোথাও বরফের উচ্চতা হয়েছে ৮ থেকে ১০ ফুট।
ছাবেদ সাথী/এম
