কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাদী মহম্মদ আর নেই। বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী ও সাদী মহম্মদের পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নীপা গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।
নীপা বলেন, ‘সাদী মহম্মদের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই তিনি একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। মা হারানোর বেদনা সম্ভবত তিনি নিতে পারেননি। এভাবেই চলছিল। বুধবার রোজা রাখলেন। ইফতারও করলেন। এরপরই তিনি নীরবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছি।’
প্রসঙ্গত, সাদী মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) গত বছরের ৮ জুলাই বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. স্বাগতিক লোহানী বলেন, ‘তার গলায় দাগ পাওয়া গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে নিজ কক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে আনা হলে আমরা তাকে মৃত পাই। প্রাথমিক সিদ্ধান্তে আমরা এটাকে আত্মহত্যা হিসেবে মনে করছি। পরিবারের সদস্যরা তাকে নিজ কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছেন।’
সাদী মহম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি একজন কিংবদন্তি শিল্পী ও সুরকার। রবীন্দ্রসংগীতে তার মূল পরিচিতি গড়ে উঠলেও আধুনিক গানেও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচুর রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও। এছাড়া, তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তার বাবা সলিমউল্লাহকে হত্যা করে। তার বাবার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরে সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে। সাদী মহম্মদের ভাই শিবলী মহম্মদ বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী।